আমরা সবাই কেন রোগী।

আমরা সবাই কেন রোগী? আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়।

আমরা সবাই কেন রোগী? আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।

গ্রামের সবাই রোগী। সেই গ্রামে ২৮ জন শারীরিক রোগী। ৮১ জন মানসিক রোগী। ০৩ জন রোগ উপভোগকারী। ০৫ জন রোগ উৎপাদনী। ০১ জন শারীরিক ও মানসিক রোগীর তালিকা তৈরিকারী। ০২ জন চিকিৎসক রয়েছে। তবে সময় থাকলেও কেউই হাসপাতালে গিয়ে সুচিকিৎসা নেয় না। তাই তারা আরোগ্য হতে না পেরে অনন্তকাল রোগ সংসারে বিচরণ করে থাকে।

চুলের আগা পায়ের তলা এ সাড়ে ০৩ হাত দেহের ২৮ জন শারীরিক রোগী বলতে

১। পঠবী রোগ ২। আপ রোগ ৩। বাযো রোগ ৪। তেজ রোগগুলো মহাভূত রোগ।

১। চক্ষু ২। কর্ণ ৩। নাসিকা ৪। জিহ্বা ৫। কায়গুলো প্রসাদ রোগ।

১। বর্ণ ২। শব্দ ৩। গন্ধ ৪। রস ৫। স্পর্শগুলো গোচর রোগ।

ভাব রোগ-০২

জীবিন্দ্রিয় রোগ

আহার রোগ

পরিচ্ছেদ রোগ

বিজ্ঞপ্তি রোগ-০২

বিকার রোগ-০৩

লক্ষণ রোগ-০৪ মোট ২৮- প্রকার রোগ। এ রোগগুলো থেকে আরো বহুপ্রকার রোগ উৎপত্তির হয়ে থাকে। বুদ্ধের পরমার্থ কথায় "রূপতী'তি রূপং,রূপতী'তি রোগং" রূপ মানেই রোগ, রূপ মানেই বিরূপ। চার মহাভূত ধাতু রূপের অসমতার কারনে রূপ বিরূপ হয়। অসমতার কারক হল তেজ বা তাপধাতু।

রূপ নিত্য নয়, উৎপত্তি, স্থিতির মুহুর্তে (স্বস্তি সুখ অনুভব) হলেও বিলয়ের পর পরিণামে তা দুঃখ হয়। একের পর এক পরমাণু আকারে উৎপত্তি, স্থিতি, বিলয় অনন্তর প্রত্যয়ের সমুত্থান রূপগুলো অনাত্মধর্ম।

মানসিক রোগী সংখ্যা- ৮১ জন বলতে-

লোভের রোগী সংখ্যা- ০৮

দ্বেষের বা ক্রোধ রোগীর সংখ্যা- ০২

মোহের রোগীর সংখ্যা- ০২ মোট অকুশল রোগীর সংখ্যা- ১২।

অহেতুক অকুশল বিপাক রোগীর সংখ্যা- ০৭

অহেতুক কুশল বিপাক রোগীর সংখ্যা- ০৮

অহেতুক ক্রিয়া রোগীর সংখ্যা- ০৩

কামাবচরণ- কুশল, বিপাক, ক্রিয়ার রোগীর সংখ্যা- (৩×৮)=২৪

রূপাবচর- কুশল, বিপাক, ক্রিয়ার রোগীর সংখ্যা- (৩×৫)=১৫

অরূপাবচর- কুশল, বিপাক, ক্রিয়ার রোগীর সংখ্যা- (৩×৪)=১২

সর্বমোট ৮১টি চিত্ত (পুথুজ্জনো উমত্তকো-পৃথকজন মাত্রে Insane উন্মাদ )।

রোগ উপভোগকারী সংখ্যা- ০৩ জন বলতে-

সুখ, দুঃখ ও উপেক্ষা বেদনা।
রোগীর তালিকা তৈরিকারী- ০১জন-

সংজ্ঞা
সুদক্ষ চিকিৎসক ০২ জন ( ০১ জন সহকারী এবং অপর ০১ জন প্রধান)

১। সম্যকস্মৃতি ২। সম্যকদৃষ্টি

হাসপাতাল বলতে "এহি পস্সিক" নামক বিদর্শন কর্মস্থান ভাবনা কেন্দ্রকে বুঝায়।

গ্রাম বলতে পঞ্চস্কন্ধকে বুঝায়। বৌদ্ধ তথা সকল মানবের 'স্কন্ধ' সম্পর্কিত জ্ঞান ভাণ্ডার পূর্ণ হোক।

লেখক-

স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
তারিখ-২৯ জুন ২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মহামঙ্গল সূত্র পালি থেকে বাংলা-২০২১।

নাগরিক পরিচিতি ফরম কেন প্রয়োজন।