পুণ্য পাথেয় নির্বাণ অব্ধি নিজের সাথে থাকে কিনা।
মৃতদেহকে ওরা খেয়ে ফেলে, পুণ্য পাথেয় নির্বাণ অব্ধি নিজের সাথে থাকে আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়।
বুদ্ধ কপিলাবস্তু নিগ্রোধারামে অবস্থান কালে সময় সুযোগ হলে রাজা মহানাম আরামে এসে বুদ্ধ ও ভিক্ষুসংঘকে দর্শন করে যেতেন এবং অভিজ্ঞ ভিক্ষুদের সাথে ধর্মালাপ করতেন।
একদিন আরাম থেকে রাজধানীর দিকে ফিরার মাঝ পথে হস্তী ও বিভিন্ন হিংস্র প্রাণী দেখতে পেয়ে এবং নগরের ব্যতিব্যস্ত শ্রমজীবী জনবহুল লোকেদের অবস্থাকে দেখে তার মনে মরণের ভয় উৎপন্ন হলো।
একদিন বুদ্ধের নিকট এ কথা নিবেদন করলেন- বুদ্ধ অমুক দিন এখান থেকে নগর দিকে ফিরে যাবার পথে আমার মনে এরূপ ভয় উৎপন্ন হচ্ছিলো। যাবার পথে হঠাৎ আমি মারা গেলে পরকালে কি গতি হতে পারে?
বুদ্ধ রাজার মনের স্বভাবকে জেনে ধর্মোপদেশ দিলেন- আপনি মারা গেলে দুর্গতি হবে না।
রাজা! ঘি পূর্ণ মাটিরপাত্রকে গভীর জলের ভেতরে ভেঙে দিলে চাঁড়াভাঙা নিচে পরে গিয়ে ঘিগুলো যেমনি জলের উপরে ভেসে উঠে। তেমনি যাদের চিত্ত শ্রদ্ধা, শীল, শ্রুত, ত্যাগ, প্রজ্ঞা থাকে তাদের চিত্ত অপায় গতি না হয়ে উর্ধ্ব সদ্গতিই হয়।
রাজা! মানুষ মারা গেলে তার মৃতদেহকে কাক, শকুন, কেঁচো খেয়ে ফেলে কিন্তু শ্রদ্ধা, শীল, শ্রুত, ত্যাগ, প্রজ্ঞা গুলো নির্বাণ অব্ধি তার সাথে পাথেয় হয়ে থাকে।
অভিজ্ঞান প্রাপ্ত পুদ্গল ব্যতীত মানুষ পাঁচটি নিমিত্তকে আগাম জানে না, তাই মরণের পর কি গতি হতে পারে সেটি নিয়ে ভয় করে-
(১) কত বছর বয়সে মরে যাবে আগাম জানে না।
(২) কোন রোগে মরে যাবে জানে না।
(৩) কোন সময়ে মরে যাবে জানে না।
(৪) কোথায় মরণ হবে জানে না।
(৫) মরণের পরে কোন গতি হবে আগাস জানবার অনিমিত্তের কারণে মানুষের মন ভয় করে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
শ্রদ্ধা- নিজের চেতনাকে বিশ্বাস করা।
শীল- নিজের আচরণ বিরতি শিক্ষাপদ ধর্মকে শরণ করা।
শ্রুত- আগে শ্রবনকৃত শ্রুতময় ধর্মজ্ঞান নিজেকে পথ দেখায়।
ত্যাগ- কৃত দানের পুণ্য পাথেয়কে নির্ভর করা।
প্রজ্ঞা- সত্য-মিথ্যা বুঝার সম্যকদৃষ্টি সম্যকসঙ্কল্প অটুট থাকা।
সবার হিত সুখ মঙ্গল হোক।
লেখক-
স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।তারিখ-২৭ জুন ২০২১ খ্রিঃ।
Comments
Post a Comment