আগামী পৃথিবী সম্পর্কে চক্কবত্তি সূত্রে কি বলা হয়েছে।

আগামী পৃথিবী চক্কবত্তি সূত্রের আলোকে দেশনা করেছেন ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। Future of Earth। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়। 

date-12may2021.

আগামী পৃথিবী চক্কবত্তি সূত্রের আলোকে দেশনা করেছেন ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। Future of Earth। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়।



Future of Earth. বর্তমান মানুষের গড়ায়ু ৭৪.৩৬ বছর। এ গড়ায়ু কমতে থাকবে, মানুষের আগামী পৃথিবীর কি পরিস্থিতি হতে পারে? সেটিকে গৌতম বুদ্ধ "চক্কবত্তি সুত্তং" দেশনায় কি বলে গেলেন সেটিকে শুনে দেখি-

মানুষের গড়ায়ু প্রতি ১০০ বছরে ০১ বছর করে ক্রমশ কমতে থাকবে। কেন গড়ায়ু কমবে?

দুশ্চরিত অধর্ম বৃদ্ধি হওয়ার কারণে মানুষের গড়ায়ু কমে যাবে। যেমন- মারণ বিষাক্ত অস্ত্র। পরমাণু অস্ত্র।জীবাণু অস্ত্র। বিভিন্ন অগ্নেয়াস্ত্র তৈরি বৃদ্ধি করছে। এ অস্ত্র নির্মাণের কারণে এগুলো আগামী পৃথিবীর শান্তির বিষয় তো নয় বরং করুণ পরিণতির কারণ। 

সেটিকে বুদ্ধের দেশনায় যা উল্লেখ রয়েছে- পরবর্তী এমন সময়ে মানুষের গড়ায়ু ক্রমশ কমতে কমতে ১০ (দশ) বছরে দাঁড়াবে। ১০ (দশ) বছরের আয়ু মানুষের "পঞ্চবস্সিকা কুমারীকা অলং পতেয্যা"- ০৫ (পাঁচ) বছর বয়সী কুমারী গৃহিণী হবে।

১০ (দশ) বছর বয়স বলতে বর্তমান সময়ে ঘি, মাখন, মধু, তালমিঠা, পুষ্টিকর খাদ্য ছাড়া এমনকি লবন পর্যন্ত বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

বর্তমান পরিস্থিতি সময়কে চিন্তা করে দেখলে বিলুপ্তি তো শুরু হয়ে গেছে। সবি বিষ ফরমালিনযুক্ত খাদ্য হয়ে গেছে। বিলুপ্ত মানে খাঁটিটা হারিয়ে যাবে ১০ (দশ) বছর গড়ায়ু আসার আগে এখন থেকে পুষ্টি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বলা যায়।

সমাজ, জাতি, গোষ্ঠী, বংশ, পরস্পরে মৈত্রী শূন্যত স্তরে নেমে যাবে। এমন সময় উপস্থিত হবে মা সন্তানকে মেরে ফেলার ইচ্ছা করবে। পিতা সন্তানকে মেরে ফেলার ইচ্ছা করবে। সন্তানরাও মাতা-পিতাকে মেরে ফেলার ইচ্ছা করবে। করুণা, মৈত্রী, দয়াধর্ম সেই ১০ (দশ) বছর গড়ায়ু হ্রাসকালে থাকবে না, শূন্যস্তরে নেমে বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সর্বশেষ অবস্থায় মানুষের পরিণতিটা হবে অত্যন্ত ধারালো অস্ত্র হাতে নিয়ে অকারণে একে অপরে হত্যা করা এক মহাধ্বংসাত্মক যুদ্ধ হবে।

তখন আমরাও কাউকে হত্যা করবো না। আমাদেরকে কেউ হত্যা না করুক, এমন মানুষগুলো কোন এক বনে পর্বত, গুহায় নিরাপদ জায়গায় গিয়ে লুকে অবস্থান করবে। কেবল সেই ব্যক্তিরাই বেঁচে যাবে। 

বাদবাকী সব মানুষগুলো যুদ্ধে মরে যাবে। এ পরিস্থিতি ঘটবে সেটিকে বুদ্ধ আগাম "চক্কবত্তি সুত্তং" এ সুত্রে বলে গেছেন। যুদ্ধের পরে বেঁচে যাওয়ার মানুষের মনে হুঁশ ফিরে আসবে।

পরে বন পর্বত গুহা থেকে ফিরে এসে আবার পরস্পর দেখা হলে ওহ্! না মরে বেঁচে যাওয়ার ফলে দেখা হলো বলে পরস্পর জরিয়ে তুমি বেঁচে আছো! খুবি খুশি হবে,  হিংসায় পরস্পর হত্যা করে সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে, আজ থেকে আমরা কাউকে হত্যা মারামারি করবো না।

প্রাণী হত্যা করবো না বিরত হবো "পাণাতিপাতা বেরমণি" শিক্ষাপদে প্রতিষ্ঠিত হবো। তাদের মনে এ পুণ্য উৎপন্ন হয়ে এক নতুন স্বর্ণযুগ আরম্ভ হবে।

মানুষের মনের মধ্যে প্রাণী হত্যা করবো না জ্ঞান ফিরে আসলে কুশল পুণ্য চেতনা জেগে উঠার ফলে তাদের গড়ায়ু ২০ (বিশ) বছরে দীর্ঘ হবে।

অতপর কারো অদত্তবস্তু চুরি করবো না আরেকটি পুণ্যকর্ম করার ফলে পরপর ১০ (দশ) সুচরিত পুণ্যকর্ম আচরণের ফলে ১০ (দশ) বছর উর্ধ্বে আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে সর্বশেষ অসংখ্য বছর দীর্ঘায়ু হবে।

ধর্মপ্রাণ সাধুসজ্জনরাও নিজের মনে গভীর সংবেগ জ্ঞান জাগ্রত করে ধর্মাচরণ করতঃ জঘন্য সংকটাপন্ন পৃথিবীর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়া একটি পুণ্যময় পরিবেশ তৈরি অশান্ত পৃথিবীকে শান্ত করার সক্ষম হোক। সবার হিত সুখ মঙ্গল হোক।

সাধু, সাধু, সাধু।

লেখক-
স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।
রাঙ্গামাটি।
সময়-রাত
১০:৩৭ ঘটিকা।
তারিখ-১২ মে ২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতনতা ও করণীয় কি।

মহামঙ্গল সূত্র পালি থেকে বাংলা-২০২১।