বুদ্ধের সর্বপ্রথম জ্ঞান প্রাপ্তির অনুভুতি কেমন ছিল।।

বুদ্ধের সর্বপ্রথম উদান কথা বা জ্ঞান প্রাপ্তির অনুভুতির কথা দেশনা করেছেন ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়।

বুদ্ধের সর্বপ্রথম উদান কথা বা জ্ঞান প্রাপ্তি অনুভুতির কথা। বৌদ্ধধর্মীয় বিষয়।

পালিঃ-
“অনেক জাতি সংসারং, সন্ধাবিস্সং অনিব্বিসং।

গহকারং গবেসন্তো, দুক্খা জাতি পুনপ্পুনং।

গহকারক দিট্ঠোসি, পুন গহেন কাহসী।

সব্বাতে ফাসুকা ভগ্গা, গহকূটং বিসংখতং,

কিসঙ্খার গতংচিত্তং, তণ্হানং খয মজ্ঝগা।”

বঙ্গানুবাদঃ-
গহকারক- জরা, ব্যাধি, মরণের হুকুমতে মেনে চলার বাধ্য জটিত তন্তুর ন্যায় নাম-রূপগৃহকে বারবার নির্মাণ হে গৃহ কারক তৃষ্ণা।

পুনপ্পুনং- পুনঃপুন অগণিত, অসংখ্য, অসংখ্যেয় আদি-অন্তহীন দীর্ঘতর কল্প-কল্পান্তর ভব-ভবে।

জাতি- জটিত তন্তুর ন্যায় জরা, ব্যাধি, মরণ দুঃখ ভয়ভীতি প্রবাহ স্রোতে জন্ম গ্রহণের।

যস্মা- কারনে।

দুক্খা- অবর্ণনীয় এই সেই ভব ভবে, নানা লোকধাতুতে নিষ্ঠুর আচরণ দুঃখকষ্ট শিকার হয়েছি।

তস্মা- সেই নিষ্ঠুর শিকারের কারনে।

গহকারং- অবিচ্ছিন্ন আদি-অন্তহীন কল্ল-কল্পান্তরে একস্কন্ধ, চার স্কন্ধ, পঞ্চস্কন্ধ গৃহকে বারবার নির্মাণ কারক হে তৃষ্ণা।

গবেসন্তো- কোত্থেকে কিভাবে হয়েছে কারো'র নিকট শিক্ষা না করে সয়ম্ভূ জ্ঞানবলে অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম মনন পর্যবেক্ষণ সন্ধান করে আসা আমি সেই বুদ্ধ।

অনিব্বিসং- গৃহকারকে ধরতে স্বয়ং প্রত্যক্ষজ্ঞান উদয় না হওয়ার কারণে।

অনেক জাতি সংসারং- দীপঙ্কর সম্যকসম্বুদ্ধ ও সুমেধ তাপস কল্পকাল থেকে দিন মাস বছর সাল সহস্র কল্পকাল গণনা করলে ০৪ অসংখ্য ০১ লক্ষ কল্পকাল পর্যন্ত।

সন্ধিবিস্সং- এ দেহস্কন্ধ গৃহকে পুনঃপুন এসে নির্মাণ করতে হয়েছে।

গহকারকং- পঞ্চকাম ঘুষ খেয়ে কদাচার করে আসা হে গৃহকারক তৃষ্ণা।

ত্বং- তোমাকে (সংসার দীর্ঘকারী, গৃহকারক, প্রতারক তৃষ্ণাকে)।

মযা- অত্যন্ত ভয়ভীতিকর জরা ব্যাধি মরণ সশস্ত্র সসৈন্য মার ঘেরা শত্রুর মাঝখানে উৎপন্ন হওয়া আমি সেই বুদ্ধ।

দিট্ঠোসি- এ বোধিবৃক্ষ মূলে তোমার নির্মিত গৃহকে মুনিন্দ্রিয় জ্ঞানের দ্বারা এখনি দেখতে পেলাম।

পুন- আবার। গেহং- জল, মাটি, বায়ু, তেজ এ চার মহাভুতধাতু সমন্বয়ে গঠিত রক্ত, মাংস, অস্থি সহ ৩২ প্রকার অশুচিপূর্ণ অত্তভূ গৃহকে।

গহকূটং- গৃহের অবিদ্যা অজ্ঞতা ছাদকে। চিত্তং- সেই বুদ্ধের চিত্ত। বিসঙ্খার- সংস্কার বিগত অসংস্কৃত নিরোধসত্যে প্রবেশ করেছে।

তণ্হানং- সংসার বিচরণকারী পপঞ্চ ধর্ম তৃষ্ণাকে।

খযং- তৃষ্ণাক্ষয়ী অরহত্ব মার্গজ্ঞানকে।

অজ্ঝগা- আজ এ বোধিবৃক্ষ মূলে এক বসাতে পেয়েছি।

সবার হিত সুখ মঙ্গল হোক।

#সাধু-সাধু-সাধু।

লেখক-
স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়।
রাঙ্গামাটি।
সময়-বিকাল ০৫:৪৩ ঘটিকা।
তারিখ-২৫ মে ২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতনতা ও করণীয় কি।

মহামঙ্গল সূত্র পালি থেকে বাংলা-২০২১।