ভিক্ষুদের বর্ষাবাস যাপন কিভাবে শুরু হল।
ভিক্ষুদের বর্ষাবাস যাপন সম্পর্কে মূল্যবান দেশনা করেছেন ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের মহোদয়। Buddhism in Bangladesh.
ভিক্ষুদের বর্ষাবাস যাপন- পুরিম এবং পচ্ছিম এই দু'রকম বর্ষাবাস যাপন রয়েছে। আষাঢ়ী পূর্ণিমার পরদিন অধিষ্ঠানকে “পুরিমবস্স” (পূর্বের মাস বর্ষাবাস) এবং শ্রাবণী পূর্ণিমার পরদিন অধিষ্ঠানকে “পচ্ছিমবস্স” (পরের মাস বর্ষাবাস) বলে।
কোন কারনে “পুরিমবস্স” পূর্বমাসের বর্ষাবাস অধিষ্ঠান ভঙ্গ হলে বা অধিষ্ঠান না করলে ভিক্ষু “পচ্ছিমবস্স” পরবর্তী মাস বা শ্রাবণী পূর্ণিমার পরদিন অধিষ্ঠান করতে হয়।
সম্যকসম্বুদ্ধ মগধ রাজগীর বেণুবন বিহারে আগে যে সময়ে অবস্থান করেছিলেন সেই সময়েও ভিক্ষুদেরকে বর্ষাবাস যাপনের বিনয় প্রজ্ঞাপ্ত করেননি।
ভিক্ষুরা গ্রীষ্ম, বর্ষা ও হেমন্ত ত্রি ঋতুতে দেশ দেশান্তরে বিচরণ করতেন। তখন লোকালয়ের মানুষেরা ভিক্ষুদেরকে এরূপ দোষারোপ করেছিলেন যে,
এ প্রব্রজিত বুদ্ধের শিষ্যরা গ্রীষ্ম, বর্ষা ও হেমন্ত ত্রি-ঋতুতে কেন দেশ দেশান্তরে বিচরণ করছে ?
সজীবেন্দ্রিয় তৃণগুলোর উপর হেঁটে অনাচার করছে, ক্ষুদ্রতর জীবেন্দ্রিয়গুলোকে ক্ষতি করছে ?
শাসন বহির্ভূত তির্থিক পরিব্রাজকরা বর্ষাযাপন করছে, পক্ষিরাও গাছগাছালিতে বাসা তৈরি করে প্রতিকুল বর্ষার ঋতুতে এক জায়গাতে অবস্থান করছে।
মানুষেরা এরূপ নিন্দার কথাগুলোকে ভিক্ষুদের কানে গেলে ভিক্ষুরা বুদ্ধকে শুনালেন তখন বুদ্ধ ভিক্ষুদেরকে বর্ষাবাস যাপনের বিনয় প্রজ্ঞাপ্ত করেছিলেন।
তখন থেকে আজ অবধি ভিক্ষুরা বর্ষাবাস যাপন করে আসছে। ভিক্ষুসংঘের সান্নিধ্য থেকেই সকল দায়ক/দায়িকারাও বর্ষাকালীন সময়ে দান শীল ভাবনা করতঃ শ্রদ্ধা, পুণ্য, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও নির্বাণ লাভের হেতু হোক। সকল প্রাণী সুখি হোক।
“চিরং তিট্ঠতু সদ্ধম্মো ”- সদ্ধর্ম শাসন চিরস্থিতি হোক।
লেখক-
স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ থের
বেতবুনিয়া কেন্দ্রিয় বিহার, কাউখালী
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।
Comments
Post a Comment