পথ প্রদর্শক কেন দরকার।

পথ প্রদর্শক দরকার আলোচনায় ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ ভিক্খু মহোদয়।

পথ প্রদর্শক দরকার।


বুদ্ধের সময়ে উপতিষ্য ও কোলিত কার সান্নিধ্যে গিয়ে থাকতেন? সঞ্চয় পরিব্রাজকের সান্নিধ্যে গিয়ে থাকতেন।


ওঁনারা দু'জন অগ্রশ্রাবক হবার পারমী পরিপূর্ণ হয়েছে। পারমী থাকলে- শ্রদ্ধা থাকে। বীর্য থাকে। স্মৃতি থাকে। সমাধি থাকে। প্রজ্ঞা থাকে। থাকলেও তাঁরা কার সান্নিধ্যে গিয়ে থাকেন? সঞ্চয় পরিব্রাজকের সান্নিধ্যে থাকেন।

তবে স্রোতাপন্ন হতে পেরছেন কি? না, পারছেন না।

পারমীবান হওয়া সত্ত্বেও ভুল গুরু সাক্ষাতের কারণে চার আর্যসত্য জ্ঞান লাভ করতে পারেননি। স্রোতাপন্ন হতে পারেননি। তাই বলেছি সঠিক গুরু সান্নিধ্য লাভ অত্যন্ত জরুরী।

সঠিক গুরু সাক্ষাত পেলে- শ্রদ্ধা, বীর্য, স্মৃতি, সমাধি ও প্রজ্ঞা পরিপূর্ণ হয়ে চার আর্যসত্য জ্ঞান লাভ হয়, দৃষ্টিমুক্ত হয়। নারী-পুরুষ ধারনা থাকলেও নির্বান লাভ করতে পারে না। নারী-পুরুষ ধারনা না করে নাম-রূপ স্বভাব ধর্ম বলে জানা উচিত। উপতিষ্য (সারিপুত্র সত্ত্ব) অস্সজিত স্থবিরের সাথে সাক্ষাত পেয়ে স্রোতাপন্ন হয়েছেন। তিনি সঠিক গুরু সাক্ষাতে তা সম্ভব হয়েছেন।

এদিকে গুরুর আচরণ দৃষ্টিমুক্ত নয়। দৃষ্টিমুক্ত না হলে স্রোতাপন্ন সকৃদাগামী অনাগামী অরহত হতে পারে না। এ ধরণের পথপ্রদর্শক গুরুর আচরণ দৃষ্টিমুক্ত না হলে তার সান্নিধ্যে থাকার শিষ্যের মুক্তিরপথ বন্ধ হয়ে যাবে। জিরো পয়েন্টে নেমে পরবে। জিরো দিয়ে জিরোকে খেয়ে ফেলার মত হয়।

তাই দৃষ্টিমুক্ত স্রোতাপন্ন হবার জন্য। নির্বাণ লাভের জন্য অত্যন্ত সঠিক পথ প্রদর্শক দরকার। দুঃখজনক হল এতদিন গুরুর সান্নিধ্যে থেকেও ভুল গুরুকে চিন্তে না পারা।
সবার হিত সুখ মঙ্গল হোক।

অনন্ত চক্রবাল লোকধাতুতে বুদ্ধের গুণঃ

৩টি ক্ষেত্র ও লোক ধাতুঃ
জন্ম ক্ষেত্র,
আজ্ঞা ক্ষেত্র ও
বিষয় ক্ষেত্র।
১। জন্মক্ষেত্র হল বোধিসত্ত্ব জন্ম হওয়া এ চক্রবাল সহ উৎপন্ন-ধ্বংসজাত ১০ সহস্র চক্রবাল। (জন্ম, বুদ্ধত্বলাভ, ধর্মচক্র প্রবর্তন সুত্র দেশনা প্রদান কালে প্রকম্পিত ১০ সহস্র চক্রবাল)।
২। আজ্ঞাক্ষেত্র হল বুদ্ধের ঋদ্ধি ও পরিত্রাণের গুণ বিস্তৃতি কোটিশত সহস্র চক্রবাল (০১ লক্ষ কোটি চক্রবাল)।
৩। বিষয়ক্ষেত্র হল বুদ্ধের সর্বজ্ঞতা জ্ঞান বিচরণের ক্ষেত্র অনন্ত চক্রবাল।
[জন্মক্ষেত্র কেবল ১০ সহস্র চক্রবাল। আজ্ঞাক্ষেত্র কোটিশত সহস্র চক্রবাল। বিষয়ক্ষেত্র অনন্ত চক্রবাল]
সবার বুদ্ধেরগুণ সম্পর্কিত সঠিক ধারনা হোক।

চক্ষু কত প্রকার ?

চক্ষু ০৫-প্রকারঃ
সর্বজ্ঞ বুদ্ধের ০৫-প্রকার জ্ঞানচক্ষু- বুদ্ধচক্ষু, ধর্মচক্ষু, সমস্তচক্ষু, দিব্যচক্ষু ও প্রজ্ঞাচক্ষু।
১। বুদ্ধচক্খু- (বুদ্ধচক্ষু) সত্ত্বগণের মনের অনুশয় ধাতুকে জানার আশয় অনুশয়ের জ্ঞান এবং সত্ত্বগণের পক্কাপক্ক ইন্দ্রিয়কে জানার 'ইন্দ্রিযপরোপরিয' জ্ঞান। এই চক্ষুদ্বয়ই বুদ্ধচক্ষু।
২। ধম্মচক্খু- (ধর্মচক্ষু) অরহত্ব মার্গ-ফল ব্যতীত নিম্ন তিন মার্গ-ফল জ্ঞানই ধর্মচক্ষু।
৩। সমন্তচক্খু- (সমস্তচক্ষু) সংস্কার-বিকার-লক্ষণ-নির্বান ও প্রজ্ঞপ্তি পঞ্চজ্ঞেয় ধর্মের সর্বজ্ঞতা জ্ঞানই সমস্তচক্ষু।
৪। দিব্বচক্খু- (দিব্যচক্ষু) দূরে কাছে আড়ালে সবকিছুকে দেখার সক্ষম দিব্যচক্ষু।
৫। পঞ্ঞাচক্খু- (প্রজ্ঞাচক্ষু) চার আর্যসত্যকে পুঙ্খানুপুঙ্খ করে উপলব্ধির সক্ষম চার আর্যমার্গ চক্ষুই প্রজ্ঞাচক্ষু। সবার জ্ঞানচক্ষু উদয়ের হেতু হোক।

সাধু-সাধু-সাধু।

লেখক-
স্বধর্ম দেশক, বিদর্শন আচার্য 
ভদন্ত পঞ্ঞাদীপ ভিক্খু মহোদয়
রাঙ্গামাটি।
সময়-সকাল ০৭.২৫ ঘটিকা
তারিখ-৩০ জুলাই ২০২১ খ্রিঃ।

Comments

Popular posts from this blog

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কি জেনে রাখুন।

মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহারে সচেতনতা ও করণীয় কি।

মহামঙ্গল সূত্র পালি থেকে বাংলা-২০২১।